Poultry Farm

ব্রয়লার মুরগি চাষ করে রোজগার কিভাবে করতে হয় সমস্ত তথ্য সংক্ষেপে আলোচনা করলাম। ব্রয়লার মুরগি চাষ করে কত টাকা ইনকাম করা যায় , সেই সম্বন্ধে যদি কিছু জানেন না তাহলে আপনি ঠিক যায়গায় এসেছেন। ব্রয়লার মুরগি পালনের জন্য কি কি সুবিধা ও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে জানতে পারবেন পুরো আর্টিকেল টি পড়লে।

•টাকা কত লাগবে ?

ব্রয়লার মুরগি পালন এর জন্য মিনিমাম দুই থেকে তিন লাখ টাকা প্রথমে বিনিয়োগ করতে হবে দুই হাজার মুরগি ফার্ম বানানোর জন্য। এর থেকে বেশিও লাগতে পারে, কেননা এখন জিনিসের দাম বেড়েছে। মিনিয়াম দেড় থেকে দুই হাজার এর ফার্ম বানাতে হবে। এর থেকে কম বানালে লাভ হবে না। লাভ হলেও তাতে সংসার চলবেনা তাই ব্রয়লার ফার্ম বানাতে চাইলে দেড় থেকে দুই হাজারের ফার্ম বানাতে হবে | যত বেশি মুরগির ফার্ম বানাতে পারবে ততই আপনার লাভ হবে। যত বেশি মুরগির ফার্ম বানাবে ততই টাকার পরিমাণ বাড়তে থাকবে।

• কি কি লাগবে?

প্রথমে ফার্ম বানাতে হবে। তারপর মুরগি পালনের জন্য ফিডার, ড্রিঙ্কার, ফাৰ্ম এর সাইটে ঘেরার জন্য লোহার নেট কিনতে হবে। লাইটের ব্যবস্থা করতে হবে। জলের ব্যবস্থার জন্য সাবমার্শিবল বসাতে হবে। ড্রিঙ্কারের জন্য জলের পাইপ কিনতে হবে। ড্রিংকার দু প্রকারের লাগবে-যখন ছোট থাকবে তখন এর জন্য এক প্রকার আর যখন বড় হবে তখন  আলাদা প্রকারের ড্রিংকার লাগবে। আর প্রতিটি লটে মুরগি চাষের জন্য তুষ বা ধানের খোসা নিতে হবে। তুষ বা ধানের খোসার সাথে কাঠের গুড়িও লাগবে। কাঠের গুড়ি না দিলেও চলবে, কেননা কাঠের গুড়ি দিলে গুড়া চারদিকে উড়বে। জলের জন্য ট্যাঙ্কি লাগবে।

•ব্রয়লার মুরগি কোথায় পাবে?

ব্রয়লার মুরগি দেওয়ার জন্য অনেক কোম্পানি আছে। যেকোনো কোম্পানির সাথে এগ্রিমেন্ট করে ব্রয়লার বাচ্চা নিতে পারো। এছাড়া বাজার থেকে ব্যক্তিগতভাবেও ব্রয়লার এর বাচ্চা নিয়ে চাষ করতে পারবে। 

•ব্রয়লার মুরগি কিভাবে পালবেন?

বাচ্চা আনার পর দুই থেকে তিন দিন হিট দিতে হবে। দুই বেলা খাবার আর দুই বেলা জল দিতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে আর কেউ নেয় না এখন, তাই কোম্পানি থেকে নিলে তারা সমস্ত কিছু বলে দিবে কিভাবে কি করতে হয়।

• ব্রয়লার মুরগি চাষ করে লাভ কত হয়? 

ব্যক্তিগতভাবে বাজার থেকে কিনে চাষ করলে বেশি লাভ হয়। দুই হাজার মুরগি চাষ করলে কুড়ি হাজার থেকে ষাট হাজার পর্যন্ত লাভ হয়। কোম্পানি থেকে বাচ্চা নিয়ে চাষ করলে কম লাভ হয়। দুই হাজার মুরগি পালন করে পনেরো থেকে চল্লিশ হাজার পর্যন্ত লাভ হয়। এই লাভ সব সময় সমান থাকে না, যখন যেরকম মুরগি হবে তখন সেই রকম টাকা পাবে।

•সুবিধা ও অসুবিধা কি কি? 

ব্যক্তিগতভাবে বাজার থেকে মুরগি নিয়ে চাষ করলে বেশি লাভ হয় যেমন তেমনি বেশি ক্ষতিও হয়। ব্যক্তিগতভাবে চাষ করলে সবকিছু নিজেকেই করতে হয়। নিজেকেই বাজার থেকে মুরগি আনতে হবে, খাবার আনতে হবে, ওষুধ কিনতে হবে, আর মুরগি বড় হওয়ার পর নিজেকেই বিক্রি করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে করা মানে সবকিছু টাকা দিয়ে আগে কিনতে হবে। এখন আর কেউ ব্যক্তিগতভাবে ব্রয়লার মুরগি চাষ করে না। এক শতাংশ মানুষ ব্যক্তিগতভাবে ব্রয়লার মুরগি চাষ করে, আর বাকি ৯৯ শতাংশ মানুষ কোম্পানির বাচ্চা নিয়ে চাষ করে। কোম্পানি থেকে বাচ্চা নিয়ে চাষ করলে কোন ঝামেলা থাকে না। কোম্পানি মুরগির বাচ্চা, মুরগির খাবার, মুরগির ওষুধ দিয়ে যায়। আর কোম্পানির লোক আসে দু-তিন দিন ছাড়া হিসাব নিকাশ আর কিভাবে কি করতে হবে সব বলে দেবে। কোম্পানি থেকে বাচ্চা নিলে রোগ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব মুরগি মারা গেলে নিজের হাত থেকে কোন টাকা খরচা হবে না শুধু তুষ ও কারেন্টের বিল আর মজুরি ছাড়া আর কিছু যাবে না। ব্যক্তিগতভাবে চাষ করলে কোন কারনে যদি মুরগি মরে যায় তাহলে যা টাকা লাগাবে সব টাকা জলে চলে যাবে। এইজন্য সবাই কোম্পানির সাথে এগ্রিমেন্ট করে মুরগি নেয়। চল্লিশ দিন হয়ে গেলে কোম্পানির লোক মুরগি নিয়ে যাবে। কখনো কখনো কোম্পানির লোক মুরগি নিয়ে যেতে দেরি করে, চল্লিশ দিনের পর যত দেরি করবে ততই তোমার লস। ব্রয়লার মুরগির ঠান্ডা ও ইকোলাই রোগ লেগেই থাকে তাই সময় মতো ওষুধ দিতে হবে। ফার্মটি ফাঁকা জায়গায় করলে ভালো, কেননা গ্রামের ভিতর করলে গন্ধ করবে। গন্ধ করলে পাশের বাড়ির লোক গালাগালি করবে। আর ঢাকনা দেওয়া কুয়ো একটি করতে হবে মরা মুরগি ফেলার জন্য। ব্রয়লার মুরগি বছরে পাঁচ থেকে সাতটিবার চাষ করা যায়।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন