যারা ফেসবুক ব্যবহার করে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই জানেনা ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা যায়। আবার অনেকে জানে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা যায়, কিন্তু কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় সেই বিষয়ে ঠিক মতো জানেনা। যদি আপনি জানেন না তাহলে এই আর্টিকেল টি পড়লে জানতে পারবেন কিভাবে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা যায়।
ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য প্রথমে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। অ্যাকাউন্ট না থাকলে আগে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বানাতে হবে।ফেসবুক প্রোফাইল ও পেজ দুটো থেকেই টাকা ইনকাম করা যায়। ফেসবুক প্রোফাইল থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য প্রথমে প্রোফাইলে 'প্রফেশনাল মোড' চালু করতে হবে। 'প্রফেশনাল মোড' চালু করার জন্য প্রোফাইলে গিয়ে ডানদিকে তিনটি ডট আছে সেই ডটে ক্লিক করতে হবে।
তারপর মাঝখানের দিকে 'প্রফেশনাল মোড' চালু আর বন্ধ করার অপশন আছে। প্রোফাইলে 'প্রফেশনাল মোড' চালু করলে একটা সুবিধা পাওয়া যায়, সেটা হচ্ছে প্রোফাইলের যতগুলি ফ্রেন্ডস আছে সবগুলি ফলোয়ারে পরিণত হয়ে যাবে। প্রোফাইলে ৫০০০ পর্যন্ত ফ্রেন্ডস করা যায়, প্রোফাইল প্রফেশনাল মোড চালু করার সঙ্গে সঙ্গেই এই ৫০০০ ফ্রেন্ডস ফলোয়ারে পরিণত হয়ে যায়।
পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য প্রথমে একটি পেজ বানাতে হবে। পেজ এক বা একাধিক ব্যক্তি পরিচালনা করতে পারে। পেজের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার জন্য প্রথম থেকেই বেশি পরিশ্রম করতে হয়। কেননা পেজ তৈরি করার পর শূন্য ফলোয়ার থাকে। টাকা ইনকাম করার পদ্ধতি প্রোফাইল ও পেজে একই রকম।
কি কি উপায়ে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা যায়?
১) স্টারস :
স্টারস টুল এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার জন্য প্রোফাইল অথবা পেজে ৫০০ ফলোয়ার। প্রোফাইল ও পেজ ৩০ দিনের পুরনো হতে হবে। স্টারস হচ্ছে একপ্রকার গিফ্ট। স্টারস অপশন চালু করার পর ফলোয়ার পোস্ট, ফোটো, রিলস ভিডিও, ফুল ভিডিও এবং লাইভ স্ট্রিমিং এ স্টারস গিফ্ট করতে পারবে। ১ স্টারস সমান হচ্ছে ০.০১ ডলার। মিনিমাম ২৫ ডলার হলে ব্যাঙ্কে অটোমেটিক ট্রান্সফার করে দেয় ফেসবুক। স্টারস অপশন চালু করার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এড করার অপশন আসে।
২) কনটেন্ট মনিটাইজেশন :
এই টুলের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার জন্য সবকিছু অরিজিনাল হতে হবে। অন্য জায়গা থেকে কপি করে পোস্ট করলে হবে না। এই টুলের জন্য আবেদন করা যায় না। ফেসবুক নিজে থেকে এই টুল দেয়। এই টুল আরও তিনটি টুলস কে মিলে তৈরি করা হয়েছে। এই টুলস এর মধ্যে আছে রিলস, বোনাস ও ইন স্ট্রিম এডস। -
রিলস :
এই রিলস টুলের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার জন্য রিলস ভিডিও পোস্ট করতে হবে। প্রতিদিন রিলস ভিডিও পোস্ট করলে তবেই বেশি বেশি ইনকাম করা যায়। প্রতিদিন রিলস ভিডিও পোস্ট না করলে রিচ ডাউন, আর এই রিচ ডাউন হলে রিলস ভিডিও কম লোকের কাছে যায় এর ফলে ইনকাম কমে যায়। কনটেন্ট মনিটাইজেশন টুল চালু হওয়ার পর রিলস ভিডিও আপলোড করার সময় ফেসবুক এর মিউজিক লাইব্রেরী থেকে গান ব্যবহার করলে, ঐ রিলস ভিডিও থেকে যা টাকা ইনকাম করবে তার থেকে ২০% মিউজিক কোম্পানিকে দেওয়া হবে।
বোনাস :
এই বোনাস টুলস এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার জন্য লেখা ও ছবি পোস্ট করতে হবে। লেখা অথবা ছবিতে লোক লাইক, শেয়ার ও কমেন্ট করলে টাকা পাওয়া যায়। লোক লাইক, শেয়ার ও কমেন্ট লেখা ও ছবিতে না করলে টাকা পাওয়া যায় না। মিনিমাম প্রতি পোস্টে ১০০ লাইক থাকলে তবেই ফেসবুক টাকা দেয়।
ইন স্ট্রিম এডস :
এই টুলস এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার জন্য বড়ো ভিডিও পোস্ট করতে হবে। যারা ভিডিও দেখবে তারা ভিডিওতে এডস দেখতে পাবে এই টুলস এর মাধ্যমে। এই টুলসটি হচ্ছে ইউটিউবের মতো।
এই কনটেন্ট মনিটাইজেশন টুল এ রিলস, বোনাস ও ইন স্ট্রিম এডস মিলে মিনিমাম ২৫ ডলার হলে ফেসবুক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে দেয়।
৩) সাবস্ক্রিপশন :
এই টুলস টি চালু করার জন্য মিনিমাম ১০০০০ ফলোয়ার লাগবে। এই টুলস এর মাধ্যমে ফলোয়ার টাকা দিয়ে মেম্বারশিপ নিলে, সেই মেম্বারশিপ এর টাকা পাওয়া যায়।
৪) ব্রান্ড প্রমোশন :
ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজে অনেক ফলোয়ার ও প্রতি পোস্টে ভালো রিচ থাকলে কোম্পানি যোগাযোগ করে প্রমোশনের জন্য। কোম্পানির থেকে টাকা নিয়ে কোম্পানির প্রডাক্ট প্রমোশন করে ভালো টাকা ইনকাম করা যায়।
৫) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং:
পোস্টে ভালো রিচ থাকলে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট, মিন্ত্রা ইত্যাদি ওয়েবসাইটে অ্যাফিলিয়েট অ্যাকাউন্ট বানিয়ে, প্রডাক্ট এর লিঙ্ক প্রমোশন করে, সেই লিঙ্ক দিয়ে কোনো ফলোয়ার কিছু কিনলে কমিশন পাওয়া যায়।
ফেইসবুক থেকে এই সব উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায়। ফেসবুক এ নিয়মিত কাজ করলে অবশ্যই টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যদি কেউ জানেনা কিভাবে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা যায় তাকে এই আর্টিকেল শেয়ার করতে পারো।
আরও পড়ুনঃ ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা হয়?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন